বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে আপনার স্বাস্থ্যে কোনো সমস্যা আছে কিনা বা শরীর কোনো পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে কিনা – সেটা জানা খুব সহজ হয়ে গিয়েছে।
তবে যখন এসব পরীক্ষা ছিল না, তখনও মানুষ নিজেরাই নিজেদের পরীক্ষা করে নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে পারতেন।
কারণ বেশিরভাগ সময়ে শরীর আমাদের নানা ধরণের সংকেত পাঠিয়ে সতর্ক করার চেষ্টা করে।
এমনই আটটি সহজ স্বাস্থ্য পরীক্ষা রয়েছে যা আপনি বাড়িতে বসে একা একাই করতে পারবেন।
এসব পরীক্ষার মাধ্যমে অন্তত ধারণা পাবেন আপনার কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা আছে কিনা।
তবে মনে রাখতে হবে সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য আপনাকে অবশ্যই একজন পেশাদার চিকিৎসকের কাছেই যেতে হবে।
কেননা ঘরে বসে করা এসব স্বাস্থ্য পরীক্ষা কেবল আপনাকে প্রাথমিক ধারণা দেবে। এটি একমাত্র রোগ শনাক্তের উপায় নয়।
ঘড়ির ছবি আঁকা
কাগজের ওপর কলম বা পেন্সিল দিয়ে ঘড়ির ছবি আঁকার মাধ্যমে আপনার মেধা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
মেধা মূল্যায়নের জন্য নিউরোলজিস্ট বা স্নায়ু বিশেষজ্ঞরা এই পরীক্ষাটি করে থাকেন।
এজন্য যাকে পরীক্ষা করা হচ্ছে তাকে কাগজের ওপর একটি ঘড়ি আঁকতে দেয়া হয়। প্রথমে বৃত্ত, তারপর সঠিক ক্রম অনুযায়ী সংখ্যা ও সবশেষে সূচ বা ঘড়ির কাঁটা।
সাও পাওলোর নিউরোলজিস্ট ফ্যাবিও পোর্তো এক্ষেত্রে ঘড়িতে বেলা দু’টা পয়তাল্লিশ ও এগারোটা বেজে দশ মিনিটের ছবি আঁকার পরামর্শ দেন৷
এক্ষেত্রে ফলাফলগুলো কীভাবে পরিমাপ করা উচিত তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন গবেষণা ও পদ্ধতি রয়েছে, তবে কেউ যদি “অস্বাভাবিক” ছবি আঁকেন, তখন সেটা মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে।
যেমন, কেউ যদি একই সংখ্যা একাধিকবার লেখেন, ঘড়ির কাঁটা যদি ঘড়ি থেকে বেরিয়ে যায়, অথবা যে সময়টি আঁকতে বলা হয়েছে তার চাইতে ভিন্ন কিছু আঁকেন।
সেইসাথে কেউ যদি ছবিটি আঁকতে অনেক সময় নেন। ছবি আঁকার নির্দেশ বুঝতে এবং সে অনুযায়ী আঁকতে অসুবিধা হলে এর পেছনে স্মৃতিশক্তি ও মেধা কমে যাওয়াকে নির্দেশ করা হয়।
বিশেষ করে, বৃদ্ধ বয়সে এই পরিবর্তনগুলো দেখা গেলে সেটি আলঝেইমার ও ডিমেনশিয়ার লক্ষণ হতে পারে।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে ভিজ্যুয়াল ফাংশন অর্থাৎ চোখের মাধ্যমে তথ্য নেয়া এবং মস্তিষ্কের সামনের অংশে থাকা ফ্রন্টাল লোবের কার্যকারিতা যাচাই করা হয়। ফ্রন্টাল লোবের সাহায্যে মানুষ পরিকল্পনা করা, যুক্তিসঙ্গত কারণ বের করা এবং আবেগ অনুভূতি প্রকাশের মতো কাজগুলো থাকে।
এছাড়া অন্যান্য ছোট ও সহজ কাজের মাধ্যমেও মস্তিষ্কের কার্যকারিতার বিষয়ে ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
যেমন, বছরের ১২টি মাসের নাম পেছন থেকে বলা, একই অক্ষর দিয়ে শুরু হওয়া ১১টি শব্দ এক মিনিটের মধ্যে বলা অথবা একই ধরণের জিনিষ যেমন, পশুর নাম, পাখির নাম, রান্নাঘরের বাসনকোসনের নাম একটানা বলা।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে মূলত অমনোযোগিতা, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, শিক্ষা ও কথা বুঝতে সমস্যা আছে কিনা সে ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যায়।
সিট অ্যান্ড স্ট্যান্ড
স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে এই সিট অ্যান্ড স্ট্যান্ড পরীক্ষাটি সবার আগে সামনে আনেন দু’জন ব্রাজিলিয়ান গবেষক, যা পরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
এই পরীক্ষাটি করতে, প্রথমে দাঁড়ানো অবস্থায় পা ক্রস করে শুধুমাত্র পায়ের ওপর ভর করে নীচে বসুন। একইভাবে শুধু পায়ের পাতায় ভর করে আবার উঠে দাঁড়ান।
এই বসা বা দাঁড়ানোর সময় পায়ের পাতা ছাড়া হাত বা শরীরের কোনো অংশ দিয়ে মেঝে স্পর্শ করা বা ভর দেয়া যাবে না।
তবে এই পরীক্ষাটি তাড়াতাড়ি করতে হবে না; ধীরে ধীরে করলেও হবে।
মূলত স্বাস্থ্যের চারটি বিষয় ওজন, নমনীয়তা, ভারসাম্য ও পেশী শক্তি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এই সিট অ্যান্ড স্ট্যান্ড পরীক্ষাটি করতে বলা হয়।
অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার কারণে নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সার, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে।
আবার ভারসাম্য, নমনীয়তা ও পেশী শক্তির অভাব হাড় ক্ষয়সহ হাড়ের দুর্বলতার সংকেত দেয়।
পরীক্ষাটি অবশ্যই খালি পায়ে, আরামদায়ক পোশাক পরে একটি সমতল জায়গায় করতে হবে। সবচেয়ে ভালো নীচে মাদুর বা কার্পেট বিছানো থাকলে। এতে পড়ে গেলেও আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে।
তবে আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন বা বয়স হয়ে যায় কিংবা পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে তাহলে পাশে অবশ্যই একজন সাহায্যকারীকে রাখবেন।
যখন কাউকে পা ক্রস করে বসতে ও দাঁড়াতে বলা হয়, তখন ওই ব্যক্তির শরীরের সম্পূর্ণ ভর তার পায়ের তলায় ছাড়া শরীরের অন্য কোনো অংশে পড়ে না।
এটি আপনি কতটা দ্রুত করছেন সেটি বিষয় না। আপনি ঠিকভাবে করতে পারছেন কি না সেটাই মুখ্য।
এখন ঠিকভাবে করছেন কিনা সেটা বুঝতে নিজেকে নিজে পয়েন্ট দিন।
ধরুন, বসা ও দাঁড়ানো এই দুটি ধাপের জন্য মোট ১০ পয়েন্ট। যদি আপনি বসা বা দাঁড়ানোর সময় হোঁচট খান বা ভারসাম্য হারান তাহলে প্রতিবারের জন্য আধা নম্বর কাটা যাবে।
যদি হাত দিয়ে বা শরীরের অন্য অংশ যেমন বাহু, হাঁটুর ওপর ভর করেন তাহলে প্রতিবার ভর দেয়ার জন্য এক নম্বর কাটা যাবে।
আবার আপনি যদি হাঁটু বা উরুতে আপনার হাত বিশ্রাম করান তাহলেও আধা নম্বর কাটা যাবে।
আদর্শ স্কোর আট থেকে ১০ পয়েন্টের মধ্যে, তবে এটি লিঙ্গ ও বয়সের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের পক্ষে সম্পূর্ণ স্কোর অর্জন করা খুবই কঠিন ও বিরল বিষয়।
যাদের স্কোর ছয় ও সাত দশমিক পাঁচ পয়েন্টের কম, তাদের এর চেয়ে বেশি স্কোর করা মানুষদের তুলনায় পরবর্তী ছয় বছরে মারা যাওয়ার আশঙ্কা দ্বিগুণ; যাদের স্কোর তিন পয়েন্ট বা এর চেয়েও কম, তাদের ওই সময়ের মধ্যে মারা যাওয়ার আশঙ্কা পাঁচগুণ বেশি।
বছরের পর বছর ধরে ২০০০ মানুষের স্বাস্থ্যের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করে, ব্রাজিলিয়ান গবেষকরা বুঝতে পেরেছিলেন যে ভাল স্কোর মানে জীবনের মান ভাল এবং আপনি বেশি বছর বাঁচবেন।
তবে ভাল খবর হল যাদের স্কোর কম তারা চাইলে এই স্কোর বাড়াতে পারেন। এজন্য দরকার নিয়মিত ব্যায়াম ও ডায়েটের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ঠিক রাখা।
পায়ে গর্ত
এই পরীক্ষাটি করতে হবে আপনার পায়ের হাঁটু ও গোড়ালির মধ্যবর্তী যেকোনো অংশে, সবচেয়ে ভালো হয় পায়ের পাতায় বা ফুলে থাকা কোনো অংশে করলে।
আপনি আপনার বুড়ো আঙুল বা দু’টি আঙ্গুল একসাথে ব্যবহার করুন এবং পায়ের ওই অংশে পাঁচ থেকে ১০ সেকেন্ড ধরে চেপে রাখুন, এরপর ছেড়ে দিন।
যদি কয়েক সেকেন্ড পরেও আপনার আঙ্গুলের ছাপ ত্বকে থেকে যায় বা গর্ত হয়ে থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে পানি জমেছে।
পানির জমার বিষয়টি আপনার প্রতিদিনের নানা অভ্যাসের কারণে হতে পারে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা, গর্ভ-নিরোধক ওষুধ নেয়া বা হরমোনের চিকিৎসা নেয়া।
আবার এটি হার্ট অ্যাটাক ও সিরোসিসের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।
আঙ্গুলের ওপর চাপ
আপনার শরীরের শিরা উপশিরা ধমনি দিয়ে রক্তসহ অন্যান্য তরলের সঞ্চালন ঠিকঠাক আছে কিনা তা বুঝতে এই পরীক্ষাটি করতে পারেন।
এজন্য আপনি এক হাত দিয়ে আরেক হাতের কোনো একটি আঙ্গুলের নখের অংশটি চেপে ধরে রাখুন, যতক্ষণ না সেই অংশটির রঙ হালকা হয়ে যায়।
এরপর আঙ্গুলটি ছেড়ে দিন। এখন নখের নীচের অংশটির স্বাভাবিক রঙে ফিরতে যদি দুই সেকেন্ডের বেশি সময় লাগে তাহলে বিষয়টি অস্বাভাবিকতার লক্ষণ হতে পারে।
সাধারণত এটি ‘পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ’ আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ।
পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ হচ্ছে আমাদের হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্ক বাদে শরীরের অন্যান্য অংশে যেমন, হাতে পায়ে যে রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হওয়া।
সাধারণত রক্তনালী সংকুচিত হয়ে রক্ত প্রবাহ কমে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়।
আবার শরীরে পানিশূন্যতার কারণে বা রোগী শকে চলে গেলেও আঙ্গুল স্বাভাবিক রঙে ফিরতে সময় লাগতে পারে। বিষয়টি শিশুদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
এখন প্রশ্ন করতে পারেন সামান্য আঙ্গুলের আগা চেপে ধরে পুরো শরীরের রক্ত সঞ্চালনের ধারণা কীভাবে পাওয়া যায়?
এর কারণ আমাদের আঙ্গুলে রয়েছে খুব সূক্ষ্ম কিছু শিরা উপশিরা। এ কারণে এই অংশটি চেপে ধরলে ওইসব শিরা থেকে রক্ত সরে গিয়ে রং হালকা হয়ে যায়।
তাই, যখন আমরা আঙ্গুল ছেড়ে দিই, তখন কী গতিতে সেই রক্ত ফিরে আসছে তা থেকে ধারণা করা যায়, আমাদের রক্ত সঞ্চালন কতটা স্বাস্থ্যকর অবস্থায় রয়েছে।
দাগ ছোপ
বেশকিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যদি পিঠ, কাঁধ, হাত বা শরীরের অন্যান্য অংশে একসাথে অনেক দাগ ছোপ, তিল, আচিল থাকে তাহলে সেটা মেলানোমা হওয়ার ঝুঁকিকে নির্দেশ করে। মেলানোমা হল এক ধরণের ত্বকের ক্যান্সার।
সেইসাথে কিছু দিক বিবেচনায় রাখতে হবে যেমন, পারিবারিক ইতিহাস, আপনি কতটা সময় সূর্যের সংস্পর্শে থাকেন, ত্বকের ধরণ, ত্বক, চুল ও চোখের রঙ কেমন।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যাদের ত্বকের রঙ ফর্সা তাদের এ ধরণের রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
শরীরে যদি একসাথে অনেক দাগ থাকে, বা দুই থেকে ছয় মিলিমিটারের মতো বড় দাগ থাকে, দাগগুলো যদি উঁচুনিচু হয়, বিভিন্ন রঙের হয় তাহলেই সেটা চিন্তার কারণ হতে পারে।
এর বাইরে শরীরে হালকা কিছু দাগ থাকা স্বাভাবিক বিষয়।
আপনার শরীরের এমন কোনো দাগ নিয়ে সন্দেহ থাকলে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখান।
চোখে দেখে বিশ্লেষণের পর তিনি আপনাকে, ডার্মোস্কোপি ও বডি ম্যাপিংয়ের মতো পরীক্ষা দিতে পারেন।
নিয়মিত নিজেকে পরীক্ষা
এটি সবচেয়ে বেশি জরুরি নারীদের জন্য। বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার থেকে বাঁচতে নারীদের নিয়মিত নিজেদের স্তন পরীক্ষা করা জরুরি।
স্তনে বা শরীরের অন্য কোথাও চাকা চাকা বা অস্বাভাবিক গোটার মতো কিছু অনুভূত হলে কিংবা তরল নিঃসরিত হলে সেটা নিয়ে হেলাফেলা করবেন না।
তবে শরীরে এমন চাকা থাকা বা তরল নিঃসরিত হওয়া মানেই সেটা ক্যান্সার নয়।
চিকিৎসকরা নারীদের প্রতিবার মাসিক শেষ হওয়ার পর আয়নার সামনে স্তন পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন।
এজন্য শুয়ে স্তনের চারপাশে আঙুল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পরীক্ষা করতে হবে। যখন যে স্তন পরীক্ষা করবেন সেই দিকের হাত মাথার নীচে রাখবেন এবং অপর হাত দিয়ে পরীক্ষা করবেন।
ব্যথার উৎস
আপনার যদি পেশীতে অনেক ব্যথা হয় এবং ওই অংশটি নড়াচড়া করলেই ব্যথা বেড়ে যায়; তাহলে আপনি সেখানে গরম পানির ব্যাগ রেখে দেখতে পারেন ব্যথা উপশম হয় কিনা। কারণ তাপ পেশীগুলোকে শিথিল করতে সাহায্য করে।
টর্টিকলিস ও হার্নিয়ায় আক্রান্তদের প্রাথমিক লক্ষণের মধ্যে পেশীর ব্যথা অন্যতম। টর্টিকলিস হলে সাধারণত ঘাড়ে ব্যথা হয় এবং মাথা একদিকে সরে যায় বা হেলে যায়।
যদি কেউ ঘাড় বেকায়দায় রেখে ঘুমান, জন্মের সময় ঘাড়ের পেশীতে চোট পেয়ে থাকেন বা পরে বড় কোনো আঘাত পান এমনকি ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল রোগ থেকেও টর্টিকলিস হতে পারে।
অন্যদিকে হার্নিয়া হল শরীরের পেশী বা টিস্যু ছিঁড়ে ভিতরের অংশগুলো বেরিয়ে আসা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হার্নিয়া পেটের নীচের অংশে দেখা যায়।
আবার গরম পানির সেক দিলে বড় ধরণের ব্যথারও উপশম হয়। যেমন বুকে ব্যথা, অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথাসহ পেটে ব্যথার ক্ষেত্রেও এটি কাজে দেয়।
তবে গরম পানির সেকে ব্যথা সেরে গেলেই এটা নিয়ে হেলাফেলা করবেন না। এই ব্যথার পেছনে বড় কারণ আছে কিনা জানার চেষ্টা করুন।
শ্রবণশক্তি পরীক্ষা
মোবাইল ও কম্পিউটারের অ্যাপ স্টোরগুলোতে বিনামূল্যে ও অর্থ বিনিময়ে শ্রবণশক্তি পরীক্ষার বিভিন্ন অ্যাপ পাওয়া যায়।
এই পরীক্ষা সাধারণত কয়েক মিনিট স্থায়ী হয় এবং ওই সময়টুকু আপনাকে একদম শান্ত পরিবেশে থাকতে হবে।
শুরুতে আপনার বয়স ও লিঙ্গসহ প্রয়োজনীয় কিছু প্রশ্নের উত্তর জেনে নেয়া হবে।
এরপর ওই অ্যাপে কিছু অডিও ফাইল দেয়া থাকবে সেটি হেডফোন বা কম্পিউটারের স্পিকারের মাধ্যমে মনোযোগ দিয়ে শুনবেন।
এসব অডিওর মাধ্যমে মূলত আপনার কানের সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করা হয়।
এজন্য আপনাকে নিম্ন, মধ্যম ও উচ্চ টোনের শব্দ শোনানো হবে। আপনি কোন স্তর পর্যন্ত শুনতে পাচ্ছেন সেটা নোট করে রাখুন।
এরপর আপনাকে উচ্চ কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে উচ্চারিত শব্দ শনাক্ত করতে বলা হবে। এসব পরীক্ষায় আপনি কেমন পারফর্ম করেছেন তার ওপর ভিত্তি করে আপনাকে স্কোর দেয়া হবে।
আপনার শ্রবণশক্তি কোন পর্যায়ে আছে এবং সেটা চিন্তিত হওয়ার পর্যায়ে কিনা সেটাও জানানো হবে।
এক্ষেত্রে আপনার যদি শ্রবণশক্তি নিয়ে সন্দেহ জাগে তাহলে অবশ্যই একজন নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
শ্রবণশক্তির বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা পেতে এই পরীক্ষাগুলি বৈধ ও যথাযথ বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
তবে চিকিৎসকরা শ্রবণশক্তি হ্রাসের বিষয়টি আরও বিশদ পরীক্ষা যেমন অডিওমেট্রির মাধ্যমে নিশ্চিত করে থাকেন।
তবে এসব বাহ্যিক শব্দ পরীক্ষার কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে। যেমন বাইরে নিয়মিত শব্দ ও মোবাইল থেকে নির্গত শব্দের মানে পার্থক্য আছে।