বিএনপির জোটে দলের সংখ্যা বেড়েছে, আন্দোলনে গতি কমেছে

বিএনপির জোটে দলের সংখ্যা বেড়েছে, আন্দোলনে গতি কমেছে

 

২০ দলীয় জোট ভেঙে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার পর তাদের কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত ৩৮টি দল যুক্ত হয়েছে। তবে যুগপৎভাবে কর্মসূচি শুরুর আগে আন্দোলন যে পর্যায়ে ছিল, এখন সে গতি খানিকটা কমেছে। আন্দোলনের গতি কমে যাওয়ার বিষয়ে গত সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও দীর্ঘ আলোচনা হয়। এ অবস্থায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি থেকে বের হয়ে ফেব্রুয়ারিতে কিছু ব্যতিক্রমী কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

এমন পরিস্থিতিতে আজ বুধবার যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। আজ কর্মসূচি থেকে ফের বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি দেবে। বিএনপির আন্দোলনে সরকারি দলের বাধা সৃষ্টি, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা দাবিতে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি এই বিক্ষোভ হতে পারে।

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, যুগপৎ আন্দোলন শুরুর আগে শরিক দলগুলোর মধ্যে যে উদ্যম ছিল, এখন আর তা নেই। ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যেও শৈথিল্য ও হতাশা তৈরি হয়েছে। এনডিপি সভাপতি আবু তাহের কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রকৃতপক্ষে কর্মসূচির ধরনের ওপর আন্দোলনের গতি নির্ভর করছে। কর্মসূচিতে ভিন্নতা এলে আন্দোলনও চাঙা হবে।

দলের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলনে ভিন্নতা আনতে চাইছে বিএনপি। নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশের আগের পর্যায়ে আন্দোলনকে নিয়ে যেতে চান দলের নীতিনির্ধারকরা।

গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশে বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করে যুগপত্ভাবে তা পালন করতে অন্য দলগুলোকে আহ্বান জানায়। তাতে সাড়া দেয় সাত দলের সমন্বয়ে গঠিত গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলের সমন্বয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ৪ দলের বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য ও এলডিপি, গণফোরাম ও জামায়াত।

দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ৪ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী বিক্ষোভ কর্মসূচির পর ঢাকার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটি। একই সময়ে জেলা পর্যায়েও একই কর্মসূচি দেওয়া যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছে। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা ধারাবাহিক বিক্ষোভের বাইরে গিয়ে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার পরামর্শ দেন।

আরো পড়তে পারেন:  নবীজি যাদের ‘উম্মত নয়’ বলেছেন

বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, গত বছর অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। কর্মসূচি দেওয়ার আগে তা কেউ ভাবেনি। দিন-তারিখ ঠিক করে আন্দোলনকে সেই পর্যায়ে নেওয়া কঠিন। তবে আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দিতে ১০ ডিসেম্বরের আগের পর্যায়ে কিভাবে নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্র জানায়, ঢাকা ঘিরে আন্দোলনের পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। এমন কিছু কর্মসূচি হাতে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে আন্দোলনে গতি আসে। এ জন্য ঢাকামুখী লং মার্চ, রোড মার্চ, সচিবালয় ঘেরাও, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচির প্রস্তাব এবারের বৈঠকেও এসেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায় থাকে, সে অনুযায়ী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে সময় ও পরিস্থিতিকে বিবেচনায় আনা হয়। সময় হলে বিক্ষোভ ছাড়াও অন্য আরো কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ আজ

যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার জেলা ও মহানগর পর্যায়ে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করবে বিএনপি ও তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। কেন্দ্রীয়ভাবে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বিএনপি। জাতীয় প্রেস ক্লাব, পুরানা পল্টন, বিজয়নগর মোড়সহ আশপাশের এলাকায় সমমনা দলগুলো কর্মসূচি পালন করবে। এলডিপি আগের মতো কারওয়ান বাজারে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করবে।

ক্ষুব্ধ জামায়াত, গণতন্ত্র মঞ্চে কোন্দল

যুগপৎভাবে কর্মসূচি পালন শুরু করলেও বিএনপির পক্ষ থেকে যোগাযোগ রক্ষা না করায় ক্ষুব্ধ জামায়াত কিছুটা দূরে সরে আছে। দলটি আপাতত দলীয়ভাবে কর্মসূচি পালন করছে। জামায়াতের প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যুগপৎ তো একা হয় না। আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বিএনপি কর্মসূচি নির্ধারণের আগে যোগাযোগ করছে না। তাই জামায়াত দলীয়ভাবে কর্মসূচি পালন করছে।’

আরো পড়তে পারেন:  পাল্টা হামলার প্রতিশোধ নিতে ইউক্রেনে ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া

গণতন্ত্র মঞ্চেও চলছে টানাপড়েন। সম্প্রতি গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর অভিযোগ করেন, যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অনেক দল সরকারের কাছ থেকে টাকা এনে কর্মসূচি করেন। এই নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর সঙ্গে নুরের দূরত্ব বেড়েছে। নুরের গণ অধিকার পরিষদ জোট থেকে বের হয়ে গেলে গণফোরামসহ বাম ঘরানার জোট নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের পরিধি বাড়ানো হতে পারে।

এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে ফেইসবুক পেজটি লাইক দিন এবং এই রকম আরো খবরের এলার্ট পেতে থাকুন

 আরো পড়তে পারেন:  

Loading...
আরো পড়তে পারেন:  জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী মাংসের পিঠালি তৈরির সঠিক রেসিপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *