করোনাকালে নারীরা মানসিক সমস্যায় বেশি ভুগছেন

করোনাকালীন সময়ে দেশে পুরুষদের তুলনায় নারীরা মানসিক সমস্যায় বেশি ভুগছেন। এর মধ্যে নারী ৩৩.১ শতাংশ, পুরুষ ২৩.৬ শতাংশ এবং উভয়ক্ষেত্রে ২৮.১ শতাংশ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। আর্ক ফাউন্ডেশনের অধীনে এক গবেষণার অনলাইন জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

জরিপে নারীদের পাশাপাশি তরুণ ও কর্মহীন মানুষদের মধ্যেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

শনিবার (১৮ জুলাই) আর্ক ফাউন্ডেশন এবং সেন্টার ফর ‘ল’ পলিসি অ্যাফেয়ার্স (এলসিপিএ)-এর আয়োজনে ‘কোভিড-১৯ এন্ড মেন্টাল হেলথ’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা বিভাগের সাবেক পরিচালক ডা. খালেদা ইসলাম এসব কথা জানান।

তিনি জানান, সারাদেশের ৫০৯ জন এই গবেষণায় সাড়া দিয়েছেন। তন্মধ্যে ৫২.৫ শতাংশ পুরুষ, ৪৭.৫ শতাংশ নারী, ৬৮ শতাংশ তরুণ, চাকুরিজীবী ৫১.৫ শতাংশ, স্কুলগামী ২৪.৮ শতাংশ, গৃহকর্ত্রী ৮.৬ শতাংশ এবং অন্যান্য ৩২.৯ শতাংশ।

তিনি আরও বলেন, পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু ভয় এবং পরিবার থেকে আলাদা থাকার কারণে একাকীত্ব থেকে অনেকে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এ ছাড়া করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়েছে। মানুষের মন যদি ভালো না থাকে স্বাভাবিক কাজে প্রভাব পরে।

আর্ক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রোমানা হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক আঞ্চলিক(নিউ দিল্লি) কর্মকর্তা ডা. নাজনীন আনোয়ার, ইউনিসেফের এইচআইভি বিশেষজ্ঞ লাজিনা মুনা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এ. এইচ. এম এনায়েত হোসেন, ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশের শিশু কিশোর এবং পারিবারিক মনোচিকিৎসা বিষয়ক সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

কোভিড-১৯ এন্ড মেন্টাল হেলথ শীর্ষক অনলাইন আলোচনা সভায় তথ্য, ছবি: সংগৃহীত


এ সময় ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে মানসিক সমস্যা বেড়েছে। সবাই এই সমস্যায় না ভুগলেও অনেকের মধ্যেই নমুনা দেখা যাচ্ছে। এই সময়টাতে এক ধরনের অনিয়ম তৈরি হয়েছে। তরুণরা রাতে ঘুমাচ্ছে কম, এতে তাদের মধ্যে এক ধরনের খিটখিটে স্বভাব তৈরি হচ্ছে। এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে হলে অন্যান্য রোগের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি দরকার। মানসিক রোগ নয় মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

ডা. লাজিনা মুনা বলেন, শুধু এই সময় নয় অন্য সময়েও নারী এবং তরুণরা মানসিক সমস্যায় বেশি ভোগেন। রাষ্ট্র, পরিবার, সমাজের সবার উচিত তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। অন্যান্য রোগের কথা চিন্তা করতে গিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্ব কম পাচ্ছে সরকারকে এ দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ডা. এনায়েত হোসেন বলেন, জেলা পর্যায়ে মানসিক রোগের চিকিৎসক দেওয়া উচিত। মানসিক চিকিৎসার জন্য জনবল বাড়াতে হবে। সবখানে বলা হচ্ছে করোনাকে মোকাবেলা করতে হলে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাই যে যে অবস্থানে আছি সেখান থেকেই চেষ্টা করতে হবে।

এ সময় বক্তারা বলেন, মানসিক রোগের আইন কাঠামো সংস্কার দরকার। লোকাল গভর্নমেন্ট আইনে কোথাও মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বলা নেই। সিভিল সোসাইটিকে সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। ডাক্তারদের ট্রেনিংয়ের আওতায় আনতে হবে। শুধু করোনাকালেই নয়, পরবর্তীতে এই বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে।

 

সূত্র: বার্তা২৪

এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে ফেইসবুক পেজটি লাইক দিন এবং এই রকম আরো খবরের এলার্ট পেতে থাকুন

 আরো পড়তে পারেন:  

Loading...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *